জেনে নিন চোখ ওঠার লক্ষণ, চিকিৎসা ও সতর্কতা ২০২৩

 

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা সবাইকে আমাদের ওয়েবসাইটে স্বাগত। আজকে আমরা আলোচনা করব চোখের একটি বিশেষ সমস্যা নিয়ে। যেটাকে আমরা প্রচলিত ভাষায় বলি "চোখ উঠা "।তবে  ডাক্তারি ভাষায় একে বলা হয় 'কনজাঙ্কটিভাইটিস' (Conjunctivitis)। চোখ ওঠা হচ্ছে চোখের ভাইরাস জনিত ইনফেকশন।  শিশু থেকে বৃদ্ধ মোটামুটি সব বয়সী মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। চোখ ওঠা  ছোঁয়াচে রোগ। ফলে দ্রুত অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। তাই চোখ ওঠা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।


চোখ ওঠা খুব পরিচিত একটি সমস্যা। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া দুই কারণেই হয়ে থাকে রোগটি। তবে বিশেষ কোনো চিকিৎসা ছাড়াই কয়েক দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায় চোখ ওঠা।


চোখ ওঠার লক্ষণ :

চোখ ওঠার কিছু  সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। যেগুলো আপনার চোখে দেখা দিলে আপনাকে বুঝে নিতে হবে যে আপনার চোখ উঠেছে। লক্ষণগুলো হলো -

(১) চোখ দিয়ে পানি পড়বে।

(২) চোখ লাল হয়ে যাবে।

(৩) চোখ ফুলে উঠবে।

(৪) ঘুম থেকে ওঠার পরে চোখের পাতা দুটি একত্রে লেগে থাকবে।

(৫) চোখ জ্বালা করবে। 

(৬) সামান্য ব্যথা হবে।

(৭) রোদের আলোতে তাকাতে কষ্ট হবে।

(৮) চোখ চুলকাবে এবং চোখের ভেতর খচখচ অনুভব হবে।

(৯) চোখে কেতুর হবে ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন গ্রিন টির উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

চোখ ওঠা যেভাবে ছড়ায় :

সাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে চোখ ওঠা রোগ হয়। আবার কখনো কখনো এলার্জির কারণেও এ রোগ হয়ে থাকে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে চোখ ওঠা রোগ দ্রুত ছড়ায়। যেমন :

(১) আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার্য  বস্তু যেমন-রুমাল, গামছা, তয়েলা, বালিশ ইত্যাদি অন্যরা ব্যবহার করলে অন্যরাও এতে আক্রান্ত হবে।

(২) চোখ ওঠার জন্য দায়ী ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়।

(৩)আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শ থেকে, যেমন-স্পর্শ বা হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে ।

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন অতিরিক্ত ওজন কমানোর সহজ কিছু উপায়

চোখ ওঠা নিয়ে কুসংস্কার :

আক্রান্ত রোগীর চোখের দিকে তাকালেই একজন সুস্থ ব্যক্তি চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হবে এমন একটি ভ্রান্ত ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। তবে এটা পুরোপুরি একটা ভুল ধারণা।

চোখ ওঠার রোগের সাধারণ চিকিৎসা ও সতর্কতা :

চোখ ওঠায রোগটি সাধারণত বিশেষ কোনো চিকিৎসা ছাড়াই ৭ থেকে  ১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী হতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নেই চোখ ওঠা রোগের সাধারণ চিকিৎসা ও সতর্কতা -

(১) হাত দিয়ে চোখ চুলকানো যাবেনা।

(২) রোগীকে কালো চশমা ব্যবহার করতে হবে।

(৩)চোখ মোছার জন্য আলাদা করে পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করতে হবে।

(৪) চোখ ওঠা রোগীদের আলাদা থাকতে হবে যাতে অন্যদের মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে না পড়ে।

(৫) দিনে ৩ থেকে ৪ বার অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ক্লোরামফেনিকল ব্যবহার করতে হবে।

(৬) চোখ ঘষে ঘষে চুলকানো যাবে না।

(৭) চোখে পানি ঝাপটা দেওয়া যাবে না।

(৮) চোখের পাতা বেশি ফুলে গেলে বরফ দেওয়া যেতে পারে।

আরো পড়ুনঃ দাঁত সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য

বন্ধুরা, চোখ ওঠা রোগ নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। একটু সতর্ক থাকলেই ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে রোগ ভালো হয়ে যায়। তবে দৃষ্টি ঝাপসা হলে, চোখ খুব বেশি লাল হলে, চোখ অতিরিক্ত ফুলে গেলে আপনাকে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং চোখের বাড়তি  যত্ন নিতে হবে। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। সবাইকে ধন্যবাদ।

আর্টিকেল রাইটারঃ প্রিয়াংকা কুণ্ডু


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url