বাচ্চাদের মোবাইল ফোনের আসক্তি কমানোর কিছু উপায়

 

বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে । এটা ছাড়া আমরা যেন একাকীত্ব বোধ করি। কিন্তু এর ক্ষতিকর দিকটা আমরা তেমন ভেবেই দেখি না। প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, সকলের শুভ কামনা করে আজকের আর্টিকেলটি শুরু করছি। আজকে আমরা বাচ্চাদের মোবাইল ফোনের আসক্তি দূরীকরণে কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব।সকাল থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত আমরা সবাই যেন মোবাইলের দাস। প্রযুক্তির এই যুগে বড়দের সাথে সাথে ছোট শিশু থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়া বাচ্চারা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন  ব্যবহার করছে। যা তাদের চোখের রেটিনা, কর্নিয়া এবং অন্যান্য অংশের বিরাট ক্ষতি করছে। তাছাড়া ক্ষতি হচ্ছে তাদের মানসিক বিকাশে। দেখা দিচ্ছে তাদের আচরণগত সমস্যা, দেরিতে কথা বলা, মনোযোগের ঘাটতি সহ আরো অনেক সমস্যা।


বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন স্লো পয়জনিং-এর মতো কাজ করে। তাই সময় থাকতে আমাদের প্রত্যেককে সাবধান হতে হবে। তাহলে আসুন জেনে নেই কিভাবে বাচ্চাদের মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে দূরে রাখা যায়।

আরো পড়ুনঃ দাঁত সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য

বাচ্চাদের মোবাইল ফোনের আসক্তি কমানোর কিছু উপায় :

আমরা বিভিন্ন কারণে আমাদের বাচ্চাদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেই। যার ফলে তাদের মধ্যে মোবাইলের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে বাচ্চাদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেওয়ার অর্থ তাদের হাতে এক বোতল মদ কিংবা ১ গ্রাম কোকেন তুলে দেওয়া। এই পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের মোবাইলের প্রতি আসক্তি থেকে রক্ষা করতে নিচের উপায় গুলো মেনে চলতে হবে -

১.বাচ্চাদের সামনে মোবাইল ফোনে চ্যাট করা, গান শোনা, গেমস খেলা, টিকটক করা, রিলস করা এবং দেখা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকবেন। কেননা বাচ্চারা বড়দের অনুকরণ করতে পছন্দ করে। তাদের মনে কৌতূহলের সৃষ্টি হয় এবং তারাও সেই কাজটি করতে চায়।

২.বাচ্চাদের অবসর সময়ে বই পড়া, ছবি আঁকা, গান শেখা, নাচ করা, খেলাধুলা করা, ঘর গোছানো, বাগান করা প্রভৃতি সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখুন। এতে করে তারা নতুন নতুন বিভিন্ন বিষয় জানতে পারবে ও শিখতে পারবে এবং তাদের মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমে যাবে।

৩.আমরা বিভিন্ন সামাজিক পরিস্থিতির জন্য বাচ্চাদের ঘরের বাইরে খেলতে পাঠাই না। এতে করে তারা ঘরে থাকতে থাকতে একঘেয়েমি অনুভব করে এবং মোবাইলে প্রতি আসক্ত হয়ে যায়। তাই বাচ্চাদেরকে ঘরের বাইরে খেলতে দেবেন। প্রয়োজন হলে তার সাথে নিজে অথবা পরিবারের কাউকে পাঠাবেন।

৪.অনেক সময় নিজেদের কাজের ব্যস্ততার কারণে আমরা বাচ্চাদের ঠিকমতো সময় দিতে পারি না। ফলে তারা একাকীত্ব অনুভব করে। তখন তারা মোবাইল ফোনকে একমাত্র সঙ্গী ভেবে নেয়। এজন্য হাজার ব্যস্ততার মাঝেও বাচ্চাদের সময় দিন। তাদের নিয়ে বিভিন্ন পার্কের, মার্কেটে, আত্মীয়ের বাসায়, বিভিন্ন মেলায় প্রভৃতি জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যাবেন।

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন রসুনের পুষ্টিগুণ , উপকারিতা ও অপকারিতা

৫.বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ছোট বাচ্চারা যখন খাবার খেতে চায় না তখন আমরা মোবাইলে গেমস অথবা কার্টুন দিয়ে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করি। যেটা একদমই করা যাবে না। বাচ্চাদের খাবার খাওয়ানোর সময় মজার মজার গল্প, কৌতুক,গান শুনিয়ে খাওয়াতে হবে।

৬.আপনার মোবাইল ফোন পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখুন। যাতে বাচ্চারা যখন তখন মোবাইল ব্যবহার করতে না পারে।

৭.রাতে ঘুমানোর আগে বাচ্চাদের হাতে কখনো মোবাইল ফোন  দেবেন না। বরং তার সাথে গল্প করুন,সারাদিন বাচ্চা কি কি করেছে, স্কুলে নতুন কি কি শিখেছে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন।

আরো পড়ুনঃ কাতলা মাছের উপকারিতা - কাতলা মাছের বৈশিষ্ট্য

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, বর্তমানে মোবাইল ফোন আমাদের খুবই প্রয়োজনীয় একটি গ্যাজেট। তবে বাচ্চাদের হাতে এটা তুলে দেওয়ার আগে অবশ্যই সচেতন থাকবেন। তারা যেন এটা খারাপ কাজে ব্যবহার না করে এবং আসক্ত না হয়ে যায়। আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার উপকারী বলে মনে হয়  তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। প্রতিটি মা-বাবা কে তার নিজ নিজ সন্তানের প্রতি যত্নশীল হওয়ার অনুরোধ রইল, সবাইকে ধন্যবাদ।

আর্টিকেল রাইটারঃ প্রিয়াংকা কুণ্ডু


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url