২০২৫ ইং সালের কাত্যায়নী পূজার সময়সূচি
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, চলছে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবের মৌসুম। তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হল দুর্গাপূজা, যা কিছুদিন আগেই মহা আনন্দের সাথে সারাদেশে পালিত হয়েছে। তবে সনাতনীদের ধর্মীয় উৎসব উদযাপনে অন্যান্য জেলা থেকে মাগুরা জেলা বেশ ব্যতিক্রম। কারণ মাগুরা জেলার সনাতনীদের কাছে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হল কাত্যায়নী পূজা। তাই দেশের মধ্যে মাগুরা জেলাতেই সবচেয়ে জাঁকজমক পূর্ণভাবে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। বন্ধুরা, আজ আমরা আপনাদের জানাবো এবছর কাত্যায়নী পূজা কবে থেকে শুরু এবং কেমন হয় মাগুরাতে কাত্যায়নী পূজা
কাত্যায়নী অর্থ হল শক্তি এবং বুদ্ধিমত্তার প্রতীক। হিন্দুধর্ম মতে দেবী দুর্গার বিশেষ একটি রূপ বা অংশ হল দেবী কাত্যায়নী । কাত্যায়নী দেবী বিশেষ করে নবদুর্গা নামে সনাতন ধর্মলম্বীদের কাছে পরিচিত। দেবী দুর্গার ৯ টি বিশেষ রূপের মধ্যে ষষ্ঠতম রূপ হল দেবী কাত্যায়নী। শাক্ত ধর্ম মতে, দেবী কাত্যায়নী মহা শক্তির একটি ভীষণা রূপ এবং ভদ্রকালী বা চণ্ডীর মতো যুদ্ধা দেবী রূপে পূজিতা।
আরো পড়ুনঃ পরিবারের সুখ শান্তি নিশ্চিত করতে জেনে নিন কিছু বাস্তু টিপস
২০২৫ ইং সালের কাত্যায়নী পূজার সময়সূচী :
মহা ষষ্ঠী - ২৭ অক্টোবর সোমবার ।
মহা সপ্তমী - ২৮ অক্টোবর মঙ্গলবার।
মহা অষ্টমী - ২৯ অক্টোবর বুধবার।
মহা নবমী - ৩০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ।
বিজয় দশমী - ৩১ অক্টোবর শুক্রবার।
মাগুরা জেলার জাঁকজমকপূর্ণ কাত্যায়নী পূজা ২০২৫:
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ২৭ অক্টোবর, সোমবার থেকে শুরু হতে চলেছে মাগুরা জেলায় জাঁকজমক পূর্ণভাবে কাত্যায়নী পূজা। আর পাঁচ দিনব্যাপী এই পূজা শেষ হবে ৩১ অক্টোবর, শুক্রবার। উপমহাদেশে কেবল মাগুরাতে এত জাঁকজম পূর্ণভাবে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৫০ সালে মাগুরার সতীশ মাঝি নিজের বাড়িতে প্রথম কাত্যায়নী পূজার আয়োজন করেন। সেই থেকে এই জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসবে পরিণত হয়েছে এই পূজা। এটি তাদের শত বছরের ঐতিহ্য।
আরো পড়ুনঃ নবান্ন উৎসব কী এবং এই উৎসব উপলক্ষে বগুড়া জেলার ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা সম্পর্কে
এবছর মাগুরা জেলা সদরের প্রায় ৫৬ টি মন্ডপে এবং জেলা সদরের বাইরে অন্য তিন উপজেলায় প্রায় ৪৮ টি মন্দিরে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। জেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জানান, প্রতিবছর মাগুরা জেলায় কাত্যায়নী পূজা দেখতে সারাদেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের পাশাপাশি নেপাল ও ভারত থেকেও লাখ লাখ দর্শনাথীর সমাগম ঘটে। তাই পূজা চলাকালীন জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পূজার প্রতিটি মন্ডপে পুলিশের পাশাপাশি কাজ করবে আনসার সদস্যরা।
কাত্যায়নী পূজা উপলক্ষে শহরের প্রতিটি পূজা মন্ডপকে ঘিরে তৈরি করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ফটক, প্যান্ডেল, তোরণ। প্রায় পুরো শহরেই করা হবে চোখ ধাঁধা না আলোকসজ্জা এবং প্রতিটি পূজা মন্ডপে আয়োজন করা হবে নানারকম আলোকসজ্জার প্রদর্শনী, যা চলবে রাতভর। দেশ-বিদেশের কয়েক শত পটুয়া শিল্পী প্রায় এক মাস ধরে পরিশ্রম করে তৈরি করছে নয়নাভিরাম প্রতিমা, মন্ডল ও পূজার আনুষাঙ্গিক সাজসজ্জা। জানা যায় অন্যান্য বছরে তুলনায় এবার আরো আধুনিকতার ছোঁয়া থাকবে কাত্যায়নী পূজায়।
আরো পড়ুনঃ বাড়িতে ময়ূরের পালক রেখে দূর করুন বাস্তুদোষ
এদিকে পূজা উপলক্ষে আয়োজিত হচ্ছে একমাস ব্যাপি মেলা এবং সেখানে অংশ নেবে দেশের বিভিন্ন স্থানের দোকানিরা। প্রতিবছর এই পূজায় মাগুরা জেলার ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ মেতে ওঠে পূজার আনন্দে। আর এ কারণে কাত্যায়নী পূজা এই জেলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
প্রিয় সনাতনী বন্ধুরা, শাস্ত্র মতে, দেবী কাত্যায়নী তপস্যা ও সন্ন্যাসের দেবী। তিনি মা দুর্গার একটি বিশেষ রূপ এবং মহা শক্তির অংশবিশেষ। প্রতিবছর আমাদের দেশের মাগুরা জেলায় এই পূজা অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ও জাঁকজমক পূর্ণভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ পালন করে থাকে এবং এ বছরও এর ব্যতিক্রম হবে না। বন্ধুরা, আমাদের আজকের পোষ্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে পোষ্টটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। সবাইকে ধন্যবাদ।
