পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায়

পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায়? এই প্রশ্নটিই অনেকেই করে থাকে। পাবদা মাছের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনেক মাছ চাষী রয়েছে যারা পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায় তা জানে না। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায় এবং পাবদা মাছ চাষের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব।

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত এই পোষ্টের সঙ্গে থাকেন তাহলে পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায় এ বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায় তা জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায়

পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায়ঃ ভূমিকা

বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক জনপ্রিয় একটি মাছ পাবদা মাছ। যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান তাই পাবদা মাছের চাহিদা অন্যান্য মাছের চেয়ে কম নয়। পাবদা মাছ চাষ করে অনেক চাষী লাভবান হচ্ছে। নতুন চাষীরা পাবদা মাছ চাষ করার জন্য পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায় এ বিষয়ে অবগত নয়। এই আর্টিকেলের তাদের জন্য পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায়? এই বিষয় সর্ম্পকে জানাবো এর সাথে পাবদা মাছ চাষের পদ্ধতি জানাবো।

পাবদা মাছ চাষের নিয়ম

পাবদা মাছ চাষের নিয়ম অনেক চাষীরা জানেনা। মাছ চাষ করে অনেকেই বছরে প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করছে কিন্তু আপনাকে সঠিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে হবে তাহলে মাছের ভাল ফলন পাওয়া যাবে এবং সেখান থেকে ভালো লাভ আশা করা যায়। এই আর্টিকেলে আমরা পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায়? এর সাথে পাবদা মাছ চাষের নিয়ম সম্পর্কে জানব।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চা না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

প্রথমেই পুকুর প্রস্তুত করতে হবেঃ

পুকুর প্রস্তুত করার জন্য বছরে অন্তত সাত থেকে আট মাস পানি থাকে এমন সেচকৃত পুকুর নির্বাচন করতে হবে। যদি সারাবছর পানি থাকে এবং পানির মধ্যে অন্য মাছ চাষ করা যায় এরকম নির্বাচন করেন তাহলে আরো ভালো হয়। নির্বাচন করার পর ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে এবং এর পাড় মেরামত করতে হবে।

পুকুরের মধ্যে কোনরকম আগাছা না থাকে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে পুকুরে প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। পুকুরে কোন ধরনের রাক্ষসে মাছ আছে কিনা সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

পোনা মজুদঃ

আপনি যদি একক চাষ করতে চান তাহলে প্রথমে পাবদা মাছের পোনা গুলোকে আপনার পুকুরের পানির সাথে খাপ খাওয়াতে হবে এর জন্য পুকুরের পানি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় উঠিয়ে সেখানে পাবদা মাছের পোনা গুলোকে কয়েকমিনিট সাঁতার কাটতে হবে এরপরে কোন গুলোকে পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে।

আর যদি বিশ্বাস করেন তাহলে পুকুরের পানি থেকে পাঁচ ফুট গড় উচ্চতা হলে পোনা মজুদ করতে হবে। মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশে দুই থেকে তিন ইঞ্চি সাইজের পঞ্চাশটি পাবদা, ১০০টি শিং, ১০ টি রুই, দশটি মৃগেল সুস্থ মাছের পোনা মজুদ করতে হবে।

পাবদা মাছের পোনার খাদ্য প্রয়োগঃ

নিয়মিত সম্পূরক খাদ্য মাছের দেহ ওজনের শতকরা ৩-৮ ভাগ হারে প্রয়োগ করতে হবে। পুকুরে পোনা মজুদ করার পর ১৫ দিন পর পর পুকুরের মধ্যে গোবর প্রয়োগ করতে হবে প্রাকৃতিক খাদ্য প্রাচুর্য তার জন্য। এরপরে পানির রং গাঢ় সবুজ হয়ে যায় তাহলে আর গোবর প্রয়োগ করা যাবে না। বিশেষ করে পাবদা মাছ রাতে খেতে পছন্দ করে তাই রাতের বেলায় ভুসি, গম ইত্যাদি এ ধরনের খাবার গুলো দেওয়া যায়।

মাছ সংগ্রহঃ

আপনি যদি সঠিকভাবে মাছের যত্ন নিয়ে থাকেন তাহলে আপনি অবশ্যই এর ভালো ফলন আশা করতে পারেন। পোনা মজুদ করার ছয় থেকে সাত মাস পরে মাছ আহরণ করা ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কারণ পাবদা মাছ ৭০-৮০ গ্রাম হয়ে গেলে বিক্রি করা যেতে পারে। আর আপনি যদি চান আরও বড় করে বিক্রি করবেন তাহলে এক বছর অপেক্ষা করুন এতে মাছের ওজন আরো বেশি হবে।

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে পাবদা মাছ চাষ

বায়োফ্লক এটি একটি মাছ চাষ করার পদ্ধতি। বর্তমান যুগে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে লাভবান হচ্ছে অনেক চাষী। কারণ বাংলাদেশের নদীগুলোতে ধীরে ধীরে মাছের পরিমাণ কমে যাচ্ছে তাই বেশিরভাগ মাছ চাষী পুকুর অথবা বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার দিকে বেশি ঢুকে যাচ্ছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বায়োফ্লক পদ্ধতিতে পাবদা মাছ চাষ সম্পর্কে কিছু তথ্য জানাবো।

আরো পড়ুনঃ বজ্রপাত কেন হয় ইসলাম কি বলে

১। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য একটি টেকসই এবং পরিবেশগতভাবে সবুজ প্রযুক্তি। যার মধ্যে পানির গুনগতমান এবং ক্ষতিকর প্রাণী অথবা রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু নিয়ন্ত্রণ করে মাছের বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে সেই পদ্ধতিকে বায়োফ্লক পদ্ধতি বলা হয়।

২। পাবদা মাছ রাতে খেতে পছন্দ করে তাই চেষ্টা করতে হবে রাতের বেলায় অন্তত দুই থেকে তিনবার খাবার দিতে। বায়োফ্লক পাবদা মাছ চাষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার দিতে হবে। যদি কোন সময় খাবারের ঘাটতি দেখা যায় তাহলে এরা একে অন্যকে খাওয়া শুরু করে। তাই এবিষয়টি বিশেষ করে নজরে রাখতে হবে।

৩। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন থাকে এই বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ পাবদা মাছ চাষে অক্সিজেন প্রচুর পরিমাণে লাগবে। সেজন্য বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের আগেই সঠিক এরশন সিস্টেম তৈরি রাখতে হবে।

৪। যেহেতু বায়োফ্লক পদ্ধতি একটি ছোট জায়গার মধ্যে করা হয় তাই মাছের পোনা মজুদ করার সময় খেয়াল রাখবেন সবগুলো পোনা যেন একই সমান হয় ছোট বড় হলে তারা একে অপরকে খাওয়ার চেষ্টা করেন। এ পদ্ধতিতে এই বিষয়টি সঠিকভাবে লক্ষ রাখতে হবে।

৫। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে স্বল্প খরচে অধিক লাভ পাওয়া যায়। পুকুরে মাছ চাষের শতকরা ৬০% খরচ খাবারের জন্য ব্যয় হয়ে থাকে। পুকুরের চাইতে এখানে খাদ্য কম লাগে। পুকুরে চাইতে অনেক সহজ চাষ পদ্ধতি। এটি আপনার বাসা বাড়িতে আপনি সহজভাবে করতে পারবেন।

৬। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে উপকারী ব্যাকটেরিয়া মাছের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বাধা প্রদান করে থাকে ফলে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ থেকে রক্ষা পায় এবং এ পদ্ধতিতে মাছের রোগ কম হয়।

পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায়

আপনি যদি পাবদা মাছ চাষ করতে চান এবং পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানেন না তাহলে আপনাকে বলে রাখি পাবদা মাছের পোনা আপনি আপনার নিকটস্থ যেকোনো মাছের নার্সারিতে গিয়ে পেয়ে যাবেন। আমাদের আশেপাশে আমরা মাছের নার্সারি দেখতে পাই। যেখানে বিভিন্ন ধরনের মাছের পোনা পাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

আপনি আপনার নিকটস্থ যে কোন নার্সারিতে গিয়ে পাবদা মাছের পোনা পেয়ে যাবেন। এছাড়া এখন বিভিন্ন রকম অনলাইন মাধ্যমেও পাবদা মাছের পোনা পাওয়া যায়। আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে পাবদা মাছের পোনা কিনতে পারেন কিন্তু আমি বলব আপনি যদি পাবদা মাছের পোনা কিনেন তাহলে আপনার নিকটস্থ নার্সারিতে গিয়ে সরাসরি কিনে নিয়ে আসুন।

পাবদা মাছ কোথায় পাওয়া যায়

বাংলাদেশের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় একটি মাছ পাবদা মাছ। আমাদের বাজারে পাবদা মাছ নিয়মিত পাওয়া যায়। আপনি বাজারে গেলেই পাবদা মাছ পেয়ে যাবেন। যদি আপনি পাবদা মাছের নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে দেহের মধ্যে অনেকগুলো পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধি পাবে। আপনি যদি সবগুলো পুষ্টি উপাদান পেতে চান তাহলে অবশ্যই নিয়মিত পাবদা মাছ খাবেন।

উপসংহারঃ পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায়

পাবদা মাছের পোনা কোথায় পাওয়া যায়? পাবদা মাছ চাষের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে উপরে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি আমাদের এই পোস্ট থেকে উপকৃত হয়েছেন। আপনাকে এই তথ্যগুলো জানতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।২০৮৭৬ 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url