শরীর সুস্থ রাখতে নারীদের যে খাবারগুলো গ্রহণ করা জরুরী -

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, বর্তমান যুগের বেশিরভাগ নারীরাই ঘরে ও বাইরে সমানতালে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের ব্যস্ততা কখনো কমে না। কর্মজীবী নারীদের অফিস থেকে ফিরে ঘরেও কাজ সামলাতে হয়। আবার যারা গৃহিণী তাদের কাজও কোন অংশে কম নয়। সংসার, পরিবার-পরিজনদের খেয়াল রাখতে গিয়ে তারা বেশিরভাগ সময় নিজে খেয়াল রাখতে ভুলে যায়। তারা ভুলে যান তাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার গ্রহনের কথা। বন্ধুরা, আজ আমরা আপনাদের জানাবো শরীর সুস্থ রাখতে নারীদের যে খাবারগুলো গ্রহণ করা জরুরী। চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক -

food

বন্ধুরা, কথায় আছে নারীরা দশভূজা। তারা দশ হাতে ঘরে বাইরে কাজ করে যাচ্ছে। একজন নারী যদি অসুস্থ হয় তাহলে তার প্রভাব পড়ে সংসারে। তখন সংসার হয়ে যায় অচল। তাই তাদের সুস্থ থাকাটা খুবই জরুরী। এজন্য তাদের খাবারের থালায় থাকতে হবে পুষ্টিকর সব খাবার। আসুন জেনে নেওয়া যাক শরীর সুস্থ রাখতে নারীদের যে খাবারগুলো গ্রহণ করা জরুরী -

চর্বিযুক্ত মাছ :

ইলিশ, রূপচাঁদা, রুই, স্যামন,টুনা, ম্যাকরেল ইত্যাদি মাছের আছে অনেকগুলো স্বাস্থ্য উপকারিতা, যা একজন নারীর শরীর সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয়। এসব মাঝে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ডিএইচএ,ইপিএ। এসব উপাদান হার্ট, ব্লাড প্রেসার, ব্রেন সহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গের সুস্থতা বজায় রাখে। এছাড়া ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নারীদের পিরিয়ডের ব্যথা ও মেনোপোজের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে এবং মাঝ বয়সী নারীদের রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস উপশম করে।  

আরো পড়ুনঃ এই শীতে নিজেকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন খান ১ টি করে ডিম

সব ধরনের বাদাম :

বাদামকে বলা হয় পুষ্টির আধার। কেননা এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ক্যালোরি, প্রোটিন,ক্যালসিয়াম, ওমেগা থ্রি, ফাইবার, জিংক, আরন, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন ই,এ,বি সহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান যা একজন নারীর শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নারীদের পিরিয়ড শুরু হওয়া থেকে মেনোপোজ পর্যন্ত হরমোন ওঠানামা করে। এই হরমোন নিয়ন্ত্রণে বাদামের অনেক ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া এতে থাকা ফলিক এসিড ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। বিশেষ করে কোলন ক্যান্সারের আশঙ্কা কমায়। বাদাম ভিটামিন বি সমৃদ্ধ, যা গর্ভাবস্থায় মায়ের শক্তি বাড়ায় এবং শিশুর জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করে। 

দুধ ও দুধজাত খাবার :

দুধ ও দুধজাত খাবার ক্যালসিয়ামের একটি দারুণ উৎস, যা নারীদের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে পেশীর ভর বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া দুধজত খাবারে প্রোটিন, ফসফরাস, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন ডি থাকে। এই পুষ্টি উপাদান গুলো বার্ধক্য ধীর করতে কার্যকরী। তাই একজন নারীর প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা দুধ বা দুধজাত খাবার থাকা অপরিহার্য। 

ডিম :

সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে অনেক নারীই পেশি ব্যথায় ভোগের। এক্ষেত্রে ডিম নারীদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি যা পেশি মজবুত করে এবং শরীরে বাড়তি শক্তি যোগায়। 

আরো পড়ুনঃ নিজেকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন খালি পেটে পান করুন ১ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি

রাজমা ডাল :

রাজমা ডালে থাকে পর্যাপ্ত প্রোটিন। এতে থাকা ফাইভার হার্টের রোগ থেকে শুরু করে ব্রেস্ট ক্যান্সার দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া নারীর শরীরের হরমোনের কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে এই ডাল। তাই নারীরা সপ্তাহে ৩-৪ দিন এই ডাল খেলে পাবেন অনেক উপকার। 

বেরি জাতীয় ফল :

নারীদের জন্য এটি একটি জরুরী সুপারফুড। কেননা এই জাতীয় ফলের রয়েছে নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা। বেরি জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন সি,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহরোধী উপাদান রয়েছে, যা ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের প্রচুর পুষ্টি প্রদান করে। এছাড়া এতে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণাবলী। 

অলিভ অয়েল :

অলিভ অয়েল নারীদের জন্য খুবই উপকারী। এই তেলে রয়েছে মনুস্যাচুরেটেড ফ্যাট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই ও কে। অলিভ অয়েল কোলন,ব্রেস্ট  ও ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এছাড়া এই তেল দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ,টাইট টু ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। 

আরো পড়ুনঃ অতিরিক্ত ওজন কমানোর কিছু সহজ উপায় সম্পর্কে জানুন

টমেটো :

আমাদের সবার খুব পরিচিত একটি সবজি হলো টমেটো। এতে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহরোধী উপাদান যা জরায়ু ও ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। এছাড়া এই সবজি ত্বকের জন্যও অনেক উপকারী। 


পালং শাক :

এই সবুজ শাকে থাকে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম, যা নারীদের পিরিয়ডের সময় ব্যথা কমাতে কার্যকরী। এছাড়া পালং শাক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে । 

আমলকি :

আমলকিতে থাকে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ। পিরিয়ডের সময় নারীদের শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আর এই ঘাটতি পূরণ করতে পারে আমলকি। এছাড়া জরায়ুর ফাইব্রয়েডের ঝুঁকি ও টিউমারের বৃদ্ধিকে কমিয়ে দেয় এই ফল। 

আরো পড়ুনঃ মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু চমৎকার উপায়

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, বর্তমানে বেশিরভাগ নারীই কর্মজীবী। তবে তারা শুধু অফিস করেই মুক্তি পান না, বাড়ি ফিরেও তাদের সামলাতে হয় ঘর সংসার। আর এজন্য একজন নারীর সুস্থ থাকাটা খুবই জরুরী। আর তাই তাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থাকা প্রয়োজন উপরোক্ত পুষ্টিকর খাবারগুলো। বন্ধুরা সব নারীদের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত শেষ করছি। সবাইকে ধন্যবাদ। 

আর্টিকেল রাইটার - প্রিয়াঙ্কা কুন্ডু



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url