জেনে নিন ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ এবং কোন খাবারগুলো পরিহার করতে হবে আপনাকে ইউরিক অ্যাসিড হলে -

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে আমাদের Lifecyclebd.com ওয়েবসাইটে স্বাগতম। বর্তমানে বহুল পরিচিত একটি রোগ হল রক্তে ইউরিক এসিড বেড়ে যাওয়া। ইউরিক অ্যাসিড এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, যা খাবার হজম হওয়ার সময় আমাদের শরীরে উৎপন্ন হয়। রক্তে এটি মাত্র বেড়ে গেলে তাকে হাইপারইউরিসেমিয়া বলা হয়। একটু মানবদেহের অ্যন্ড কম্পাউন্ড, যা কিডনি দ্বারা ফিল্টারেট হয়ে প্রস্রাবের সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু কোন কারনে যদি এই ইউরিক অ্যাসিড তৈরির প্রক্রিয়ায় গোলমাল হয় বা কিডনি দ্বারা কম বের হয় তখন রক্তে এর মাত্রা বেড়ে যায়। তবে দুই তৃতীয়াংশ মানুষের ক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড শরীরের কোন ক্ষতি করা না। কিন্তু রক্তে অতিমাত্রায় এটি বেড়ে গেলে তা হতে পারে বিপদজনক।


বন্ধুরা, আজ আমরা আপনাদের জানাবো এই ইউরিক অ্যাসিড কি, এই রোগের লক্ষণ এবং রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে কি কি খাওয়া যাবেনা। আসুন দেরি না করে জেনে নেওয়ার যাক ইউরিক অ্যাসিড সম্পর্কে।

ইউরিক অ্যাসিড কিঃ

ইউরিক অ্যাসিড রক্তে পাওয়া বর্জ্য পদার্থ। এটি উত্পাদিত হয় যখন শরীর প্রক্রিয়াকরণ করে এবং পিউরিন নামে পরিচিত রাসায়নিকগুলি ভেঙে দেয়। ইউরিক অ্যাসিড রক্তে দ্রবীভূত হয়, কিডনির মধ্য দিয়ে যায়, প্রস্রাবের সাথে মিশে যায় এবং শরীর থেকে বের হয়ে যায়। যদি ইউরিক অ্যাসিড শরীরে থেকে যায়, তবে এর ঘনত্ব হাইপারইউরিসেমিয়া নামক অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ এবং অঙ্গগুলির ক্ষতি করার সম্ভাবনা রাখে।
ইউরিক অ্যাসিডের যাত্রা মিলিগ্রাম (mg) প্রতি ডেসিলিটার (dL) এ পরিমাপ করা হয়। স্বাস্থ্যকর এবং অস্বাভাবিক ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য আলাদা, যেমনটি নীচে দেওয়া হয়েছে।

ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা পুরুষদের ক্ষেত্রেঃ

সাধারন মাত্রা- ২.৫ থেকে ৭ মিলিগ্রাম/ডিএল

ঊর্ধ্বতন মাত্রা – > ৭ মিলিগ্রাম/ডিএল

নিন্ম মাত্রা - < ২ মিলিগ্রাম/ডিএল

ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নারীদের ক্ষেত্রে

সাধারন মাত্রা- ১.৫ থেকে ৬ মিলিগ্রাম/ডিএল

ঊর্ধ্বতন মাত্রা – > ৬ মিলিগ্রাম/ডিএল

নিন্ম মাত্রা - < ১.৫ মিলিগ্রাম/ডিএল

ইউরিক অ্যাসিডের সাধারণ লক্ষণ

১) হাত পায়ের জয়েন্ট ফুলবে ও ব্যথা করবে।

২) ঘনঘন প্রস্রাব হবে।

৩) প্রস্রাবে ইনফেকশন হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন টমেটোর আবাক করা জাদুকরী গুনাগুন

যে খাবার গুলো পরিহার করতে হবেঃ

- অর্গান মিট অর্থাৎ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জাতীয় মাংস যেমন-কলিজা, মগজ, জিহ্বা, ফুসফুস, কিডনি ইত্যাদি খাওয়া যাবে না। কারণ এগুলো ইউরিক এসিড বাড়ায়।

- অধিক চর্বিযুক্ত গরুর মাংস, খাসির মাংস, ভেড়ার মাংস বা মহিষের মাংস খাওয়া যাবে না। কারণ এসব খাবারে ইউরিক এসিডের মাত্রা অধিক। এসব মাংস যদি খেতে চান তাহলে একেবারে চর্বি ছাড়া মাংস অ করে খাবেন৷

- সামুদ্রিক মাছ এবং শক্ত খোসাযুক্ত প্রাণী যেমন- চিংড়ি, শামুক, কাঁকড়া ইত্যাদি খাবার এড়িয়ে চলুন।

- সব রকমের ডাল, মটরশুটি, সিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি ইত্যাদি খাওয়া পরিহার করতে হবে।

- মধু, চিনির সিরাপ, চিনিযুক্ত পানীয়, বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত ফলের জুস, কোমল পানীয় একেবারেই খাওয়া যাবেনা ৷

- কিছু কিছু শাকসবজি যেমন- পালংশাক, পুঁইশাক, ব্রকোলি, ফুলকপি এড়িয়ে চলুন। এছাড়া যাশরুমও খাওয়া যাবে না ।

- চিনিযুক্ত পানীয়, অ্যালকোহোল এবং ক্যাফেন জাতীয় পানীয় খাওয়া যাবে না।

আরো পড়ুনঃ আপনাকে ক্যান্সার হতে দূরে রাখবে এইসব পুষ্টিকর খাবার গুলো

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আশা করি পুরো আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা ইউরিক অ্যাসিড সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি যদি আপনাদের উপকারী বলে মনে হয় তাহলে অন্যদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। সবাইকে ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url