আপনাকে ক্যান্সার হতে দূরে রাখবে এইসব পুষ্টিকর খাবার গুলো -

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, মানুষকে যে রোগ গুলো বেশি ভোগায়, তার মধ্যে সবচেয়ে ভীতিকর হলো ক্যান্সার। ক্যান্সার শরীরে একবার বাসা বেধে ফেললে রোগীকে বাঁচিয়ে ফেরানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে এই ঘাতক রোগে। তবে সচেতন রোগীর প্রাথমিক অবস্থায় রোগ ধরা পরলে যথার্থ চিকিৎসায় ক্যান্সার পুরোপুরি সে যেতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কিছু পুষ্টিকর খাবার রাখলে সেগুলো আমাদের ক্যান্সারে ঝুঁকি কমায়। বন্ধুরা আজ আমরা আপনাদের জানাবো সেসব খাবারের কথা যেগুলো আমাদের ক্যান্সারের হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা করতে সক্ষম। 


বন্ধুরা, শরীরের যেকোনো কোষের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধিই ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। শরীরের ওজন ঠিক রাখতে এবং ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে প্রতিদিনের খাবারে রাখতে হবে কিছু পুষ্টিকর খাবার, যা ক্যান্সার হতে আমাদের দূরে রাখবে। আসুন জেনে নেই সেই পুষ্টিকর খাবার গুলো কি কি -

মাশরুম :

মাশরুম পুষ্টিকর, উচ্চ খাদ্য শক্তি এবং ভেষজ গুণে ভরপুর। এতে থাকা বেটা- ডি,ল্যামপট্রোল,টারপিনয়েড ও বেনজোপাইরিন উপাদান ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধ করে। বিশেষ করে স্তন্য ক্যান্সার এবং প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে মাশরুমের কোন তুলনা নেই। 

মিষ্টি আলু :

মিষ্টি আলু ভিটামিন, ফাইবার, ম্যাগানিজ এবং খনিজ সমৃদ্ধ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্য। এক গবেষণা থেকে জানা যায় যে, বেগুনি রংয়ের মিষ্টি আলুতে রয়েছে অ্যান্টি-ক্যান্সার উপাদান। এতে থাকা অ্যান্থোসায়নিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান কোলন ক্যান্সার, ব্লাডার ক্যান্সার,  স্তন্য ক্যান্সার, গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের মত যেকোনো ক্যান্সারের কোষ মেরে ফেলে। 

হলুদ :

হলুদ হল একটি মহা ঔষধ। ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এটি। এক গবেষণায় জানা যায় যে,কাঁচা হলুদের থাকা কারকামিন নামক উপাদানে ক্যান্সার বিরোধী ক্ষমতা আছে। এই উপাদানটি টিউমারের কোষকে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হতে বাধা দেয়।

বাদাম :

বাদাম হল ভিটামিন ই এর সবচেয়ে ভালো উৎস। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ চিনা বাদাম কোলন, ফুসফুস, যকৃত এবং অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুকি কমায়। তাই সকাল কিংবা বিকালে খাবারে বাদাম রাখুন। 

ব্রকলি :

পুষ্টিবিদদের মতে, ব্রকলি দারুন পুষ্টিকর সবজি। আমেরিকান ক্যান্সার রিচার্জ ইনস্টিটিউটের তালিকার ক্যান্সার প্রতিরোধী দশম খাবার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে ব্রকলি। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বায়োঅ্যক্টিভ যৌগ। এসব যৌগ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। ক্রুসিফেরাজ নামক একটি উপাদান স্তন্য ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। গ্যাস্ট্রিক, প্রোস্টেট, কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রতিরোধেও ব্রকলি উপকারী। 

গ্রিন টি :

ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর প্রধান কারণ মেটাস্ট্যাসিস বা ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া। গ্রিন টি তে রয়েছে পলিফেনোলিক কম্পাউন্ড, ক্যাটেচিন,গ্যালোক্যাটেচিন এবং ইজিসিজি। যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, টিউমার বৃদ্ধি রোধ ও ক্যান্সার স্থানান্তরন অর্থাৎ মেটাস্ট্যসিস রুখে মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়।

টমেটো :

পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি হল টমেটো। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে টমেটো দারুন ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা লাইকোপেন ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে ক্যান্সারে ঝুকি কমায়। 

রসুন :

রসুন ক্যান্সার প্রতিরোধী খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। বেশ কিছু গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে যে বেশি রসুন খাওয়ার ফলে খাদ্যনালী, পাকস্থলী এবং কোলন ক্যান্সারের মত ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। 

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল :

ভিটামিন সি ক্যান্সার হওয়ার জন্য দায়ী নাইট্রোজন যৌগের গঠন রোধ করে। বাতাবি লেবু, কমলালেবু, লেবু, মাল্টা,স্কোয়াস ইত্যাদি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাদ্যনালী, মূত্রাশয়,স্তন্য ক্যান্সার, সারভিকাল ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। 

পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি :

পালং শাক, লেটুস পাতা, সরিষা শাক,হেলেঞ্চা শাক সহ দেশীয় সবুজ শাক পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এনজাইম। এইসব উপাদানগুলো ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবুজ শাক পাতা থাকা আবশ্যক। 

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, সুস্থ থাকতে এবং ক্যান্সার থেকে দূরে থাকতে উপরোক্ত খাবারগুলো প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে। আশা করি আমাদের আজকের পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এই ধরনের উপকারী পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট Lifecyclebd.com এর সাথেই থাকুন। সবাইকে ধন্যবাদ।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url